আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে ‘সত্যম শিভাম সুন্দরাম’ এই গানটি। এই গান শোনেননি কিংবা মনে মনে ভালোবাসেননি এরকম মানুষের সংখ্যা হয়ত নেই, এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল গানটি। গানের সাথে এই ছবিটিও বক্স-অফিসে সুপারহিট তকমা পেয়েছিল সে সময়। এতটা জনপ্রিয় হওয়ার পরেও এই গানটিকে এবং ছবিটিকে নানান বিতর্ক ঘিরে রয়েছে। কি সেই বিতর্ক?
শোনা যায় এই ছবির গল্প নাকি লেখা হয়েছিল কিংবদন্তি লতা মঙ্গেসকারকে ঘিরেই। এ কথা ভেবেছিলেন স্বয়ং রাজ কাপুর। প্রথম থেকেই এই ছবিতে গান গাওয়ার পরিকল্পনাও করে রেখেছিলেন পরিচালক। তবে কিংবদন্তি প্রথমে রাজী হয়েছিলেন কিন্তু পরে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন এই গান থেকে। এর কারণও জানা গিয়েছে।
পরিচালক কন্যা ঋতু নন্দা লিখিত ‘রাজ কাপুর স্পিকস’ নামে নিজের বইয়ে এসব কথা লেখেন তিনি। লেখিকা বলেছেন, ‘যখনই মাথায় এসেছিল একজন পুরুষ ভীষণ সাধারণ দেখতে এক নারীর প্রেমে পড়ছে স্রেফ তাঁর গলার স্বর শুনে, তখনই লতার মুখ আমার চোখে ভেসে উঠেছিল।‘
লেখিকা বলেছেন যে তাঁর বাবা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন দুটি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও ভরসা জন্মায় সম্পর্কের বুনিয়াদের ওপর ভিত্তি করে। এই ছবির প্রস্তাব প্রথমে স্বয়ং লতা মঙ্গেসকারের কাছে হাজির হলেও পরে কিন্তু নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণই উল্লেখ আছে অন্য আরেকটি বইতে।
সেই কথা লেখা রয়েছে সাংবাদিক বীর সাংভির আত্মজীবনীতে। সেখানে লেখক জানিয়েছেন একবার এক সাক্ষাৎকারে আড্ডার ফাঁকে এই প্রশ্নের জবাব দেন রাজ কাপুর। পরিচালক বলেছিলেন, ‘একটা নুড়ি পাথরের মধ্যে কোন বৈশিষ্ট্য নেই। কিন্তু তবে সেই নুড়িপাথর এই একটু রং মাখিয়ে দিলে তা পরিণত হয় ঈশ্বরে। এরকমই যিনি খুব ভালো গাইছেন কিন্তু পরে জানা গেল তিনি দেখতে অত্যন্ত কুৎসিত।‘ কুৎসিত শব্দটা শুনে লতা মঙ্গেসকার ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। এর আগেও ছবির স্বার্থে লতার এই গুণ এবং রূপ বৈপরীত্যের মধ্যে যে এতটা ফারাক এই বিষয়টিকে টেনে এনেছিলেন রাজ কাপুর।
আর তার পরই শোনা যায় সত্যম শিভাম সুন্দরাম ছবি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন লতা নিজেকে এবং ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গান গাওয়ার প্রস্তাবও। যদিও পরে জানা যায় পরিচালক রাজ কাপুরই তার মান ভাঙিয়ে ছিলেন।